মে ১৯৪৮ থেকে ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯। ফিলিস্তিনে দশ মাসের গোপন এক মিশন চালায় ইসরাইল। যুদ্ধের বিভীষিকায় ফিলিস্তিনীরা ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন রিফিউজি ক্যাম্পে। বেশিরভাগ ঘর-বাড়ি শূন্য পড়ে আছে। ইহুদিদের মাথায় দুষ্টু এক বুদ্ধি এলো। বিশেষ একটি টিম গঠন করে ফিলিস্তিনীদের ঘরে থাকা বইগুলো চুরি করলো। বিশেষভাবে বাছাইকৃত হাজার হাজার বই।
বিজেতা কর্তৃক দখলকৃত দেশের লাইব্রেরি ধ্বংস বা চুরির ব্যাপার ইতিহাসে অনেক শোনা যায়। তবে সাধারণ মানুষদের বাসায় ঢুকে এভাবে বই চুরির পরিকল্পনা পুরো মানবেতিহাসেই বিরল!
ক’বছর আগে ইসরাইলের জাতীয় গ্রন্থাগারে নিজের এক গবেষণার কাজে গিয়ে ব্যাপারটা টের পান ইহুদি গবেষক ও ফিল্মমেকার বেনি ব্রুনার। ব্যাপার তাকে এতোটা বিস্মিত করে যে কাজটা নিজের দেশের হলেও তিনি একে আখ্যা দিয়েছেন ‘ডাকাতি’ হিসেবে। The great book robbery নামে এরপর একটি ডকুমেন্টারিও বানিয়েছেন।
একইরকম চুরি পশ্চমারাও করেছে। ইসলামি যুগের চর্চিত জ্ঞানের ওপর ভর করেই যে আজকের আধুনিক জ্ঞানচর্চার অগ্রগতি- এই ইতিহাস তারা শুনতেও নারাজ।
তবে হাওয়া বদলাচ্ছে। এতোদিন অস্বীকার করে এলেও পশ্চিম আজকাল স্বীকার করা শুরু করেছে বিজ্ঞানের আজকের উন্নতির পেছনে মধ্যযুগের অবদান। মানে মুসলিমদের অবদান।
এতোদিন পরিকল্পিতভাবে আরবের জাহিলিয়া যুগকে টেনে ওরা লম্বা করে আসছিলো। ইসলামি যুগকেও এড করে পুরো সময়কে দেখাতো ‘অন্ধকার’ যুগ হিসেবে।
এখনো অবশ্য অনেকে দেখায়। নতুন প্রজন্মের সব জানার কৌতূহলের সামনে হার মেনে এখন বলছে- না, ইসলামি যুগ অন্ধকার যুগ ছিলো না। অনেক বিলম্বে হলেও ভাবনা তো সাধুবাদযোগ্যই। একদনি এভাবেই সব বদলাবে…
এই শতাব্দী কেবল আকাশে যাবার বা সমুদ্রে ঘর বানাবার নয়, ইতিহাসের শেকড় খুঁজে পাওয়ারও। এরপর হাওয়া দেখবেন ঠিক দিকেই বইতে শুরু করবে।
“মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে”…!
Leave a Reply