ইনশাআল্লাহ আর একদিন বা দুদিন পর আমাদের দুয়ারে কড়া নাড়তে আসছে ঈদুল ফিতর। এইবার হয়তো করোনার প্রেক্ষাপটে অনেক কিছুই আমাদের পুনর্বিবেচনা করতে হবে। স্বাভাবিক প্রয়োজনের বাইরে বড় একটা বিষয় ঈদের দিন আমরা কিভাবে কাটাবো বা ঈদের নামাজ কি করে পড়বো।
ঈদের নামাজের হুকুম
প্রথমে মৌলিক কয়েকটা বিষয় শেয়ার করে নামাজ আদায়ের পদ্ধতিটা বলার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।ঈদের নামাজ সম্মিলিতভাবে ফরজে কেফায়াহ আর ব্যক্তিগতভাবে ওয়াজিব। এর মানে হলো ইচ্ছে করে নামাজ ছেড়ে দেয়ার সুযোগ নেই, কিন্তু একদল মানুষ যদি নামাজ আদায় করেন আর বাকিরা কোন কারণে আদায় করার সুযোগ না পান, তাহলে হুকুম আদায় হয়ে যাবে। সবাই গুনাহগার হবে না।
জামাতে অংশগ্রহণের চেষ্টা করা উচিৎ
সুতরাং প্রথম চেষ্টা থাকা উচিত অবশ্যই ঈদের জামাতে শরিক হওয়া। ঈদের সময় যেহেতু একাধিক জামাতের সুযোগ থাকে মসজিদে, আশা করা যায় সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে নামাজ আদায় করা যাবে। তবে একান্তই যদি যাওয়ার সুযোগ না হয় বা মনে বেশিরকম ভয় কাজ করে তাহলে বাসায়ও আদায় করা যেতে পারে।শুধু এইটুকু এনসিওর করতে হবে যে, একা না পড়ে বাসায় যারা আছে তাদের নিয়ে জামাত পড়ে নেয়া। একদম একা পড়ার ক্ষেত্রে আলেমগণ নিরুৎসাহিত করেন।
ঈদের নামাজের খুৎবা
আর খুতবা ঈদের নামাজের অংশ হলেও বাসায় আদায় করার ক্ষেত্রে খুতবা না পড়তে পারলে আশা করা যায় আল্লাহ পাক নামাজ কবুল করে নিবেন। তবে যারা আরবি রিডিং পড়তে পারেন তারা অনলাইন থেকে ছোট খুতবা নামিয়ে নিয়ে পড়তে পারেন। দেখে পড়া যাবে। খুৎবা না পড়লে নামাজ হবে না এরকম বলা যাবে না যেহেতু হাদিস পাওয়া যায়।
এইবার আসি যদি বাসায় থাকি তাহলে নামাজ কি করে আদায় করবো। ঈদের নামাজ দুই রাকাত, উচ্চস্বরে কেরাত পড়তে হয় আর অতিরিক্ত কিছু তাকবীর দিতে হয়।
চলুন দেখি ধারাবাহিকভাবে কিভাবে ঈদের নামাজ পড়া যায়
1- তাকবীর দিয়ে নামাজ শুরু করা
2- সানা পড়া
3- অতিরিক্ত তিনটা তাকবীর দেওয়া (বা ছয়টা কারও মতে) প্রথম তাকবীরের সময় হাত ছেড়ে দেওয়া, তৃতীয়বার তাকবির দিয়ে নাভিতে বা বুকে হাত বাধা।
৪- সুরা ফাতেহা পড়া
৫- অন্য যে কোন একটা সূরা পড়া
৬- স্বাভাবিকভাবে রুকু সেজদা দেয়া
৭- দ্বিতীয় রাকাতে উঠে যথারীতি সুরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়া
৮- রুকুতে যাওয়ার আগে আবার তিনটা (বা পাঁচটা) অতিরিক্ত তাকবীর দেয়া। এরপর আরেকটা তাকবীর দিয়ে রুকুতে চলে যাওয়া এবং স্বাভাবিকভাবে বাকি নামাজ শেষ করা
৯- পারলে খুৎবা পড়া
ঈদের দিনের বিশেষ কয়টি সুন্নাহ
১- ঈদের রাতে দোয়া করা, 2- গোসল করা, 3- আতর বা খুশবু ব্যবহার করা, 4- বেশি বেশি তাকবীর পড়া, 5- কিছু খেয়ে জামাতে যাওয়া, ৬- শুভেচ্ছা বিনিময় করা, 7- পারলে জামাতে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে ভিন্ন দুই রাস্তা ব্যবহার করা, ৮- সদকাতুল ফিতর বাকি থাকলে আদায় করে দেয়া
সবাই সবার জন্য বেশি বেশি দুআ করি। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তাওফিক দিন এবং মাহে রমজানের পূর্ণ বারাকাহ দান করুন।
Leave a Reply