একটা সমাজ হিসেবে আমরা এখনো সুস্থির নই। স্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারি নি। ভুল চিন্তা, অপুষ্ট ভাবনা, উপার্জনমুখী শিক্ষা আমাদেরকে বহুধাবিভক্ত করে রেখেছে।
তারচে’ ভয়ংকর ব্যাপার নিজের চিন্তাকেই যথোপযুক্ত মনে করা এবং যে কোনো উপায়ে অন্যের ওপর তা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা- আমাদের সমাজে যা প্রবলভাবে বিদ্যমান।
মৌলিক ও একমুখী শিক্ষার অনুপস্থিতি, দ্বীনি শিক্ষার অপূর্ণতা এই সমস্যার মূল কারণ। হুজুগে পথচলার খেয়ালি মানসিকতা তো আছেই। ফলে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ একসাথে বসবাস, চলা-ফেরা, দেখা-সাক্ষাতের সুবাদে সামাজিক বা জাতিগত যে সংহতি গড়ে উঠার কথা, আমাদের এখানে তা হয়নি।
ধর্মীয় বা রাজনৈতিক দুয়েকটা বিষয়ে স্বাভাবিক এক ধরনের মিল ছাড়া আমাদের সমাজের চিন্তাগত একক কোনো ভিত্তি নেই। ভাষা-পোশাক-গায়ের রং- বাহ্যিক এই সাংস্কৃতিক উপাদানগুলো সুস্থির একটা সমাজগঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে মাত্র, শেকড় নয় কখনো।
উপলব্ধি, বোধ-বিশ্বাস ও সচেতনতামূলক ঐক্যই একটা জাতির ভিত্তি গড়ে দেয়। শেকড় মজবুত করে। আমাদের তা নেই।
হাজার বছরের ঐতিহ্যের গর্বে বুক ভরানোর পাশাপাশি এই লজ্জাজনক বাস্তবতাও আমাদেরকে মানতে হবে।
আর এইসব না থাকা এবং ভেতরগত বিরোধ ও নেতিবাচক চিন্তার প্রাবল্যে ধর্মীয় বিশ্বাস বা রাজনৈতিক চেতনার দুয়েকটা মিলও তেমন কোনো ফায়দা বয়ে আনে না।
ভেতরে প্রবল অস্বস্তি গোপন করে লোক দেখানো একরকম সৌজন্য মেনে সমাজটা এগুচ্ছে।
রুগ্ন, ক্ষয়িষ্ণু এবং অশেষ বিব্রতকর হলেও এই বাস্তবতা অনিবার্য- খুব সহজে এর কবল থেকে আমাদের মুক্তি নেই। আজ যেমন নয়, নিকট ভবিষ্যতেও সম্ভাবনা বলা যায় প্রায় শূন্যের কোঠায়।
Leave a Reply