পেগিডা
পেগিডার ব্যানারে ইউরোপে মুসলিম অভিবাসন এবং ইসলাম বিদ্বেষী আন্দোলনের সূচনা হয় পূর্ব-জার্মানির স্যাক্সনি রাজ্য এবং এর রাজধানী ড্রেসডেনে।
২০১৪ সালের শেষদিকে বিশেষত সিরিয়ান শরণার্থী ইস্যুতে কিছু মানুষের বিরোধিতার সূত্র ধরে এই আন্দোলনের উদ্ভব ঘটে। পরের কয়েক মাসে ফ্রান্সের শার্লি এবদোয় হামলার প্রেক্ষাপটে শরণার্থী ইস্যু থেকে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী আন্দোলনে রূপায়িত হওয়া এই পেগিডা (Pegida)দ্রুতই বিস্তৃতি লাভ করে।
২০১৪ ’র নভেম্বরে ফেসবুকে একটি পেইজ খোলার মাধ্যমে এই গ্রুপ তাদের অনলাইন যাত্রা শুরু করে। মাত্র এক বছরের মাথায় এই আন্দোলন এতোটাই ব্যাপকতা লাভ করেছে যে, জার্মানির রাজনৈতিক অঙ্গনে পেগিডা আজকাল রীতিমতো ডানপন্থী রাজনৈতিক প্লাটফর্ম হিসেবে স্বীকৃত হচ্ছে। পেগিডার আহ্বানে হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে আসছে।
শার্লি এবদোয় হামলার ঘটনার সুযোগে জার্মানির গণ্ডি ছাড়িয়ে এই আন্দোলন পুরো ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশপ্রেম, নিরাপত্তা আর খৃষ্টান ধর্ম রক্ষার দোহাই দিয়ে এই আন্দোলনের কর্মী-সমর্থকেরা সরাসরি ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রকাশ্যে ‘স্টপ ইসলাম’ লেখা বিশাল সব ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে, মসজিদের ছবির ওপর লাল বর্ণে ক্রস আঁকা টি-শার্ট পরে তারা মিছিল-মিটিং এবং সমাবেশ করে বেড়ায়। তাদের বক্তব্য-
যে-কোনো মূল্যে ইউরোপকে ইসলাম ও মুসলিমবিহীন করাই আমাদের উদ্দেশ্য। কাজ তো বটেই, এই আন্দোলনের নামেই রয়েছে প্রকাশ্য ইসলামবিরোধিতা।
পেগিডার অর্থ ও মতলব
কয়েকটি জার্মান আদ্যক্ষর মিলে গঠিত হয়েছে এই ‘পেগিডা’ শব্দটি, যার অর্থ- প্রতীচ্যের ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমী ইউরোপীয়বর্গ। ইংরেজিতে- ‘পেট্রিয়টিক ইউরোপিয়ানস এগেইনস্ট দ্যা ইসলামাইজেশন অফ অক্সিডেন্ট’।
২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তাদের বিক্ষোভে সেম্পার অপেরা ভবনের সামনে ১৭ হাজার মানুষ যোগদান করলে এই আন্দোলন প্রথমবারের মতো ব্যাপক আলোচনায় আসে। এই পেগিডা আন্দোলনে ঠিক কারা সামিল, নিশ্চিত করে বলা সহজ নয়।
বিশ্বব্যাপী ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিষয়ের পাশাপাশি বনসহ জার্মানির একাধিক শহরে সালাফি মতাদর্শীদের কার্যকলাপ থেকে শুরু করে জার্মানিতে ক্রমবর্ধমান শরণার্থীদের সংখ্যা; সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে সাধারণ নাগরিকদের সরকার ও প্রশাসন সংক্রান্ত নানা অভিযোগ-অনুযোগ। এই সব অস্পষ্ট, আকারবিহীন ভীতি-আশঙ্কা-আকাক্সক্ষা ও হতাশা মিলে যে আন্দোলন দানা বেঁধেছে, তা একদিকে খৃষ্টান ইউরোপ এবং অন্যদিকে বহিরাগত ইসলামকে মুখোমুখি করে এক মানসিক দ্বন্দ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে।
তাদের রাজনৈতিক কোনো এজেন্ডা এখনো স্পষ্ট না হলেও ইসলাম এবং মুসলিম অভিবাসনের বিরোধিতা শুরু থেকেই প্রকাশ্যভাবে চলে আসছে।
তবে বাস্তবতা বলছে- দ্বন্দ্ব যদি কোথাও প্রকট হয়ে থাকে, তবে দৃশ্যত তা জার্মান জনমানসেই: কারণ পেগিডার বিরোধিতায় ড্রেসডেন শহরেই চার হাজার মানুষ পাল্টা প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
বন, কাসেল কিংবা ভুরৎসবুর্গ-এর মতো শহরে পেগিডার পক্ষে দু’শো মানুষ পথে নামলে, তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ পেগিডার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। গোটা জার্মানিতে মোট ২০ হাজার, তাদের মধ্যে ১২ হাজার শুধুমাত্র মিউনিখে।
গত জানুয়ারিতে পেগিডার ব্যানারে এই আন্দোলন শুরু হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই সাধারণ জার্মান নাগরিকেরা এর বিরোধিতা করে আসছেন। তাদের অভিযোগ- দেশপ্রেম আর ধর্মের নামে পেগিডা জার্মান সমাজে মূলত মৌলবাদ ও শ্রেণিবৈষম্য উসকে দিতে চাচ্ছে। সাম্প্রতিক প্যারিস হামলার প্রেক্ষাপটে পেগিডা তাদের আন্দোলন আরা জোরদার করেছে।
ইসলাম, জঙ্গিবাদ কিংবা মুসলিম অভিবাসনের পাশাপাশি এখন শরণার্থী সংকটই তাদের প্রধানতম ইস্যু।
বাভারিয়া যেমন একদিকে জার্মানির সর্বাপেক্ষা রক্ষণশীল প্রদেশগুলোর মধ্যে গণ্য, অপরদিকে তা জার্মানির সমৃদ্ধতম রাজ্যগুলোর মধ্যেও পড়ে। মিউনিখ সম্ভবত জার্মানির সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী শহর। কাজেই এখানকার মানুষ দৃশ্যত ক’জন শরণার্থী এসে তাদের সমৃদ্ধিতে ভাগ বসাল, তা নিয়ে চিন্তিত হবার কারণ দেখেন না।
মিউনিখের মেয়র ডিটার রাইটার জনতাকে বলেছেন- ‘আমাদের এখানে সব বর্ণ, জাতি এবং ভাষার মানুষের স্থান আছে; সব ধর্ম ও ধর্মবিশ্বাসীর জন্য স্থান আছে: যাঁরা শুক্রবার মসজিদে যান, যাঁরা শনিবার সিনাগগে যান এবং যাঁরা রবিবার গির্জায় যান অথবা যাঁরা বাড়িতে থাকতেই ভালোবাসেন- সবাই এখানে সমান মর্যাদা ও অধিকার রাখেন’।
পেগিডা নিয়ে নেতাদের দ্বিধাগ্রস্ততা
জার্মানির রাজনৈতিক মঞ্চে সাম্প্রতিকতম আবির্ভাব ‘পেগিডা’ নামধারী এক অভিবাসন বিরোধী আন্দোলন, যার সূচনা পূর্বের ড্রেসডেন শহরে। কিন্তু পেগিডা-ই যেন জার্মানদের ‘সাইলেন্ট মেজরিটি’- বা নীরব জনসাধারণকে সোচ্চার করে তুলেছে।
জার্মানির রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ পেগিডার পথ আন্দোলনের তাৎপর্য তথা সম্ভাবনা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন না হলেও, কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত বৈকি। জার্মানির প্রটেস্টান্ট গির্জার প্রধান হাইনরিশ বেডফোর্ড-স্ট্রোম স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ‘উদ্বাস্তুদের প্রতি যাতে ভালো আচরণ করা হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য খৃষ্টানদের সব কিছু করা উচিত।
স্যাক্সনি রাজ্যের প্রটেস্টান্ট বিশপ ইয়োখেন বোল বলেছেন, পেগিডা সমর্থকরা ক্রিসমাস ক্যারল গেয়ে একটি খৃষ্টীয় প্রতীক ও খৃষ্টীয় প্রথার অপব্যবহার করছেন।
পেগিডা নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে মতভিন্নতাও বিদ্যমান। ফেডারাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি টোমাস দেমেজিয়ের পেগিডা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের অশুভ হিসেবে গণ্য করার বিপক্ষে। অপরদিকে সাবেক চ্যান্সেলর গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার, যিনি এককালে স্যাক্সনির মুখ্যমন্ত্রি ছিলেন, তিনি চান- সব সাধারণ, ভদ্র-সভ্য নাগরিক যেনো পেগিডার র্যালিগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।
পূর্ব জার্মানির টুরিঙ্গিয়া রাজ্যের সদ্যনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রি, বামদলের বোডো রামেলো বলেছেন- ‘দামি জামা-কাপড় পরা নব্য নাৎসিদের প্রতি আমাদের কিছু বলার নেই’।
আন্দোলনের ভুল প্রেক্ষাপট
ইউগভ সংস্থার সর্বাধুনিক জরিপ অনুযায়ী জার্মানির এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পেগিডার প্রতি সহানুভূতিশীল। ওদিকে আগামী বছর জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থী শরণার্থীদের সংখ্যা বেড়ে দু’ লক্ষে দাঁড়াবে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যদিও এর সঙ্গে ‘ইসলামীকরণের’ কোনো সম্পর্ক নেই,
কেননা ২০১৫ সালজুড়ে জার্মানিতে যে সব উদ্বাস্তুরা আসছেন, তাঁদের অধিকাংশই সিরিয়া থেকে আসা খৃষ্টান।
মুসলিমদের প্রবেশ বাড়ছে অতিসম্প্রতি সিরিয়ায় বিভিন্ন দেশের আক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে।
পেগিডার এখনকার প্রতিবাদ সাধারণভাবে উদ্বাস্তুদের আগমন নিয়েই, ‘জার্মানি অভিবাসনের দেশ নয়’ এই সেদিনও এ কথা বলেছেন পেগিডা নেতা লুট্স বাখমান। হয়তো আসল সত্য হলো এই-
জার্মানি যে আজ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাার্থীদের কাছে ইউরোপের সেরা দেশ এবং অভিবাসীদের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরেই সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য, সেই অযাচিত সম্মানে সাধারণ জার্মানরা হয়তো কিছুটা সচকিত এবং বিড়ম্বিতও। আর এই সুযোগটা নিয়েই মাঠে নেমেছে পেগিডা।
পেগিডার ‘পক্ষে’ এক তৃতীয়াংশ জার্মান!
জার্মানিতে শুরু হওয়া ইসলামবিরোধী সমাবেশের দাবি-দাওয়াকে সমর্থন করছে এক তৃতীয়াংশের মতো জার্মান। সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে জানা গেছে এ তথ্য। এদিকে শরণার্থীদের ঢল ঠেকানোর উপায় খুঁজছে বার্লিন। পেগিডার ব্যানারে হাজারো মানুষের জমায়েত পুরো জার্মানিতেই আলোড়ন তুলছে।
যদিও মনে করা হয়- পেগিডা কার্যত সাবেক কমিকউনিস্ট পূর্ব জার্মানির মানসিকতাই প্রকাশ করছে, তবে জরিপে দেখা গেছে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। ইসলামবিরোধী সমাবেশের দাবির সঙ্গে সম্মতি প্রদানকারীদের মধ্যে সাবেক পূর্ব এবং পশ্চিম জার্মানির প্রায় সমপরিমাণ মানুষই রয়েছে।
পোলস্টার ইউগভ-এর জরিপে জানতে চাওয়া হয়- এটা কি ভালো যে, কেউ একজন রাজনৈতিক শরণার্থী নীতির ভুলভ্রান্তি জনসমক্ষে তুলে ধরছে এবং ইসলামপন্থার বিরোধিতা করছে?- পেগিডা দৃশ্যত এই দাবিই করছে।
সাবেক পূর্ব জার্মানির ৩৬ শতাংশ এবং সাবেক পশ্চিম জার্মানির ৩৩ শতাংশ মানুষ এই বক্তব্যের পক্ষে রায় দিয়েছেন। পোলস্টার মোট ১০২৫ জন জার্মানের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এরপর সেটিকে ১৮ বছরের বেশি বয়সী জার্মান প্রতিনিধিদের মতামত হিসেবে প্রকাশ করেছে।
প্রসঙ্গত, জার্মান রাজনীতিবিদরা পেগিডাকে ডানপন্থী হিসেবে সমালোচনা করে আসছেন। তাদের মত হচ্ছে- জার্মানি কোনোভাবেই ‘ইসলামাইসড’ হচ্ছে না। জার্মান সমাজ যতোটা মনে করে তার চেয়েও অনেক কম, মানে জার্মানির মোট জনসংখ্যার মাত্র চার শতাংশ মুসলমান৷
পেগিডাকে রুখতে অনলাইন ক্যাম্পেইন
জার্মানির রাজপথে এসব প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রভাব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেখা যাচ্ছে। ২০১৪ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ফেসবুকে সক্রিয় হওয়া পেগিডার পাতা লাইক করেছেন ৭০ হাজার মানুষ। ফেসবুকে জনপ্রিয়তার বিচারে এই সংখ্যা জার্মানির বড় রাজনৈতিক দল সিডিইউ বা এসপিডি-র চেয়ে খুব একটা কম নয়। পেগিডা এবং হোগেসা তাদের ফেসবুক পাতা ব্যবহার করে তথাকথিত ইসলামি চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে জার্মানদের আহ্বান জানাচ্ছে।
এদিকে, বছরকয়েক আগে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে জিম্মি ঘটনার প্রেক্ষিতে মুসলমান বিরোধী মানসিকতা যাতে বাড়তে না পারে সে উদ্দেশ্যে চালু হওয়া হ্যাশট্যাগ ‘আই’ল রাইড উইথ ইউ’ এখন জার্মানিতেও পেগিডার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। পেগিডা ওয়াচ নামক একটি গ্রুপ, যারা নব্য নাৎসি এবং পেগিডার কর্মকা-ের দিকে নজর রাখছে, তাদের ফেসবুক পাতায় এক-দেড় মাসেই ১৫ হাজারের বেশি লাইক পড়েছে।
টুইটারে এই গ্রুপ হ্যাশট্যাগ ‘নো-পেগিডা’ ব্যবহার করে বিভিন্ন টুইটও করছে।
রাস্তায় প্রকাশ্য প্র্রতিবাদ
ইসলামবিরোধী গ্রুপগুলোর প্রতিবাদ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জার্মানিতে এখন অভিবাসীবিরোধী মনোভাব, জিনোফোবিয়া এবং উগ্র ডানপন্থীদের কর্মকা- নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। ইসলামবিরোধীদের প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রতিবাদে রাজপথেও নেমেছেন অনেকে। ড্রেসডেনে যেদিন পেগিডা সমাবেশ করছে, সেদিন তাদের বিরোধীরাও রাস্তায় নেমেছিলো- ‘ড্রেসডেন ফর অল, অল ফর ড্রেসডেন’ ব্যানার হাতে।
একই সময়ে কোলনে রাস্তায় সমবেত একদল মানুষের হাতে ছিল ব্যানার ‘ইউ আর কোলন, নট নাৎসি’।
শিল্প-বাণিজ্যের নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে রাজনীতিক মহল এবং সবচেয়ে বড় কথা সাধারণ জার্মানরা পেগিডা-র অভিবাসন বিরোধী মনোভাবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে নিয়ে এ যাবৎ জার্মানিতে যে মূল্যবোধ গড়ে উঠেছে এবং বিদেশে জার্মানির যে ভাবমূর্তি সৃষ্টি হয়েছে, পেগিডা-র মতো আন্দোলন তাকে বিপন্ন করছে বলে মনে করেন বেশিরভাগ জার্মান নাগরিক।
‘অ্যান্টি নাৎসি’ নামে নতুন একটি অ্যাপও তৈরি হয়েছে, যেটি ব্যবহার করে বার্লিন এবং ব্রান্ডেনবুর্গে কখন, কোথায় পেগিডা প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করছে এবং কোন রাস্তা তারা ব্যবহার করছে, তা জানা যাবে। এই অ্যাপ ডানপন্থীদের বিরোধীদের জন্য বিশেষ সহায়ক, কেননা তারা এই অ্যাপ অনুযায়ী পাল্টা কর্মসূচি দিতে পারে।
ইসলামবিরোধী পেগিডার সমালোচনায় এ্যাঙ্গেলা
জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঙ্গেলা মার্কেল নববর্ষের বার্তায় বলেছেন, তাঁর দেশ শরণার্থীদের গ্রহণ করা অব্যাহত রাখবে। এসময় ইসলামবিরোধী পেগিডা আন্দোলনেরও সমালোচনা করেন তিনি।
জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে ম্যার্কেল বলেন,
‘যাঁদের সহায়তা প্রয়োজন জার্মানি তাঁদের সহায়তা করবে’। তিনি জানান- ২০১৪ সালে জার্মানি আশ্রয়প্রার্থীদের কাছ থেকে দুই লক্ষেরও বেশি আবেদন পেয়েছে, যেটা বিশ্বে সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ২০১৪ সালই সবচেয়ে বেশি শরণার্থী দেখেছে বলেও জানান জার্মান চ্যান্সেলর। এটা গত বছরের শেষ দিকের তথ্য, ২০১৫ সালে শরণার্থী সংখ্যা বেড়েছে আরো বেশি হারে।
মার্কেল সে বক্তৃতায় আরো বলেন- নির্যাতনের শিকার মা-বাবার সন্তানেরা জার্মানিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বেড়ে ওঠতে পারবে, এ জন্য জার্মানি গর্ব করতে পারে।
সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানির কয়েকটি শহরে ইসলামবিরোধী পেগিডার আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মার্কেল এর সমালোচনা করে জার্মান নাগরিকদের এ ধরনের কর্মসূচি থেকে নিজেদের দূরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন- এ ধরনের কর্মসূচি বিভিন্ন বর্ণ ও ধর্মের মানুষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ। ‘আপনারা এই আন্দোলনের আয়োজকদের অনুসরণ করবেন না। তারা শীতল হৃদয়ের অধিকারী এবং তাদের মন প্রায়ই পক্ষপাতদুষ্ট ও ঘৃণায় পূর্ণ’।
Leave a Reply