বিতর্কিত এনআরসি ও বিজেপির ডার্টি পলিটিকস পৃথিবীর বৃহত্তর মানবকারাগার হওয়ার পথে আসাম

এনআরসি

Date

Author

Blog Duration

14 minutes

পৃথিবী আপন কক্ষপথে ফিরছে। বাদ-মতবাদের বিতর্ক কম তো হলো না। এখনো চলছে, ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। তবে দেশে-দেশে ট্রাম্প-পুতিন-মোদিরা এসে হিসেব সব বদলে দিচ্ছেন। কচ্ছপ অনেক পরে এসে বুঝলো মরুভূমি মাড়ানোর সাধ্য তার নেই। আমাদের পণ্ডিতবর্গও আজকাল স্বীকার করা শুরু করেছেন- ভবিষ্যতবাণী সব বেকার।

উদারতা-আধুনিকতা-সমানাধিকার কোনোটার সংজ্ঞাই শেষতক ঠিক থাকছে না। আঞ্চলিকতা ও জাতীয়তাবাদের নতুন সব ঘোরটোপে আটকা পড়ে যাচ্ছে।

আমার ভালোই সব ভালো। আমাদের অধিকারই পাবে অগ্রাধিকার!

পক্ষ বিপক্ষ আর অভাগা মুসলমান

কোনো এক কালে গ্রামগুলোতে একশ্রেণীর মোড়লের দেখা মিলতো। ভালো-মন্দ আর অধিকার-সমানাধিকারের মতো ব্যাপারগুলোকে তারা নিজেদের মতো করে ঠিক করে নিতেন। এখন করছেন ট্রাম্প-মোদির মতো তথাকথিত বিশ্বমোড়লেরা। আগে বঞ্চিত হতো গরিব। এখন হয় মুসলমান। অভাগা মুসলমান।

অধিকার হারায় মুসলমান। মার খায় মুসলমান। আবার অভিযোগের তীরগুলোও এসে বেঁধে এই মুসলমানেরই বুকে।

দেশ আছে তো নেতা নেই। সম্পদ আছে তো আধিপত্য নেই। দিনশেষে কিছুই আর তাদের থাকে না। অভাগা মুসলমানরা নয়তো আর কে?

বিপুলা এই পৃথিবীর একভাগ শান্ত-স্থির, অন্যভাগে জ্বলছে আগুন। একপক্ষের মানুষ সুখ-স্থিতি-সমৃদ্ধির হিসেবে বিভোর, অন্যপক্ষের লোকেরা দুর্ভোগ-লড়াই-পরাজয়ের কারণ ও প্রতিকারের খোঁজে দিশেহারা। এই একপক্ষ বা প্রথমপক্ষকে আপনি ধনী ঠাওরাতে পারেন, অন্যপক্ষকে গরিব। প্রথমপক্ষকে আপনি শিক্ষিত ও স্মার্ট আখ্যায়িত করতে পারেন, দ্বিতীয় পক্ষকে অলস ও অশিক্ষিত।

সমস্যাটা বাধে যখন দেশ-কালের সীমা ছাপিয়ে প্রথম পক্ষের সব গ্রুপের কমন একটা পরিচয় মেলে ‘অমুসলমান’ হিসেবে, আর দ্বিতীয় পক্ষের মুসলমান।

বিশ্বমানচিত্রটা সামনে এনে একটু তাকান, সংখ্যা ও সীমানায় প্রাধান্য আছে তো ভূখ-টাই জ্বলছে। এই প্রাধান্য যেখানে নেই, সেখানে তো কিছুই নেই। নদীভাঙনের প্রকোপে কখনো ঠিকানা হারাচ্ছে তো কখনো নিজের পরিচয়টাই। একদিকে লাশের পাহাড় জমছে তো অন্যদিকে রিফিউজির ঢল। তবুও, তারপরও আপনি ভিকটিম নন; হচ্ছেন অপরাধী। মজলুম নন হচ্ছেন জালেম। উদার পৃথিবীর ধারাবাহিক এই অপরাজনীতিরই সাম্প্রতিক ও সর্বশেষ শিকার হচ্ছেন আসামের মুসলমানেরা।

রাজনীতির প্যাঁচালো শ্লোগানে কখনো বাঙাল কখনো অনুপ্রবশেকারী হিসেবে উঠে এলেও মূল ব্যাপার সেই একটাই- তারা মুসলমান। আর সবার বাঁচার, ভালো থাকার বা সিম্প্যাথি পাবার অধিকার থাকলেও মুসলমানের যে নেই!

এনআরসি

এনআরসি-ও-বিজেপি

গত ৩০ জুলাই এনআরসি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন) ’র দ্বিতীয় ও ফাইনাল ড্রাফট প্রকাশ করে বিজেপি নেতৃত্বাধীন আসাম রাজ্য সরকার। তিন বছর ধরে বাড়তে থাকা শংকাটা সেদিনই বজ্র হয়ে আছড়ে পড়ে প্রান্তিক আসামবাসীর ওপর। ফাইনাল এ খসড়া থেকে বাদ পড়েন ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ। অনেকে ঠিকঠাক প্রমাণ যেমন দিতে পারেন নি, সবরকম প্রমাণ পেশের পরও তালিকায় অনেকের ঠাঁই হয় নি। বাবা-মায়ের নাম আছে তো সন্তানের নেই। স্ত্রীর আছে তো স্বামীর নেই। সেনা অফিসার, সাংবাদিক এমনকি কজন বিধায়কও রয়েছেন বাদপড়াদের তালিকায়।

তালিকা প্রকাশের পর শুধু আসাম নয়, বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশজুড়েই। অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ইতোমধ্যে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য হয়েছেন- উদ্ভূত পরিস্থিতির ঠিকঠাক সমাধান না করতে পারলে তিনি পদ ছেড়ে দেবেন।

আসামে বিজেপির শরিক দল এজিপিও পরিস্থিতির যথার্থ সামাল দেয়া ও মুসলিমদের বাদ দিয়ে অন্যদের নাগরিকত্ব দেয়ার অপচেষ্টা বন্ধ না হলে জোট ছাড়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে। এদিকে অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফন্টের মাওলানা বদরুদ্দিন আজমল তো ঘোষণাই দিয়ে রেখেছেন- ‘আসামের মুসলমানদের অবৈধ নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করাটা ষড়যন্ত্র।’ প্রয়োজনে তিনি আইনী লড়াই চালাবেন। তবে এতোকিছুর পরও বাস্তাবতা হলো-

বিপদ যা ঘটার তা ঘটে গেছে। ক্ষতি যাদের হবার ইতোমধ্যেই হয়ে গেছে। দশকের পর দশক ধরে আসামের অবহেলিত ও বঞ্চিত মুসলিমরাই যে আত্মপরিচয়হীন এমনকি দেশহারা হতে যাচ্ছেন তাতে কারো কোনো সন্দেহ নেই।

এনআরসি থেকে বাদ চল্লিশ লাখ

এনআরসি থেকে বাদ পড়া এই চল্লিশ লাখ লোকের বড় অংশই মুসলমান। আদালতের দেয়া একমাস সময় ইতোমধ্যে পেড়িয়ে গেছে। কোর্টের মাধ্যমে তাদেরকেই এখন প্রমাণ করতে হবে তারা ইন্ডিয়ান, ‘বাংলাদেশী’ নন। অশিক্ষিত ও হতদরিদ্র এই মানুষগুলোর বড় অংশেরই যে সে সামর্থ্য নেই, বিজেপিসহ সব পক্ষ তা ভালোই জানে। যুগ যুগ ধরে উচ্চশিক্ষা বা চাকরি-বাকরির অধিকার বঞ্চিত কৃষিনির্ভর এই মানুষগুলো রাষ্ট্রের সেবা শুধু কম পান নি, নিয়েছেনও কম। তাদের অনেকের কাছেই নিজেদের নাগরিকতা প্রমাণের যথেষ্ট রসদ নেই।

গ্রামের প্রান্তিক মানুষেরা কবেই-বা সরকারি কাগজপত্রকে খুব গুরুত্ব দিয়েছেন বা আগলে রেখেছেন? ফি বছর নদীভাঙনে কেউ জমি হারাচ্ছেন তো কেউ বসত-ভিটা। ক’টা কাগজ আগলে রাখা তাদের পক্ষে কীভাবে সম্ভব হবে?

অনেকের ক্ষেত্রে আবার সব কাগজ প্রদানের পরও বাংলাভাষী ও মুসলিম নাম থাকায় তালিকায় ঠাঁই না হবার অভিযোগ আছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সুপারিশও তাদের বেলায় বিবেচনায় নেয়া হয় নি। সুতরাং আদালতের দেয়া মাত্র এক মাসে তারা সব ঠিকঠাক করে নিজেদের নাগরিক প্রমাণ করতে পারবেন, বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই তেমন আশা করা যায় না। এদিকে বিজেপির প্রধান অমিত শাহসহ হিন্দু নেতাদের লাগাতার হুমকি ও স্থানীয় বিজেপি প্রশাসন যে তাদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে নেই, সেটা বলাই বাহুল্য।

সবমিলিয়ে আসামের দরিদ্র মুসলমানদের জন্য আসছে ডিসেম্বর যে ভয়াবহ বিপর্যয় নিয়ে হাজির হচ্ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। রাজ্যজুড়ে মুসলমানদের মধ্যে এখন শুধুই আতংক। ক’জন তো ইতোমধ্যে আত্মহত্যা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বাদপড়াদের তালিকায় শুধু মুসলমান নন, হিন্দু ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর লোকেরাও আছেন। তবে তাদের তেমন কোনো সমস্যা হবে না। সে ব্যাপারে একটু পরে আসছি।

আসামের ডাউটফুল সিটিজেন: সরেজমিন তদন্ত

ইউনাইটেড এগেইনস্ট হেইট-এর একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম ক’মাস আগে আসামের তথাকথিত ‘ডাউটফুল সিটিজেন’ সম্পর্কে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। উত্তর প্রদেশের সাবেক ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ এসআর দারাপুরি এই টিমের নেতৃত্ব দেন। এ রিপোর্টের ভূমিকায় এসআর দারাপুরি লিখেছেন –

‘এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের অংশ হিসেবে এবং এর সরেজমিন তদন্ত থেকে শুরু করে রিপোর্ট তৈরির কাজ পর্যন্ত এর প্রতিদিনের কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার সূত্রে নিশ্চিত বলতে পারি- আসাম এখন আগ্নেয়গিরির ওপর অবস্থান করছে। যেকোনো সময় এর উদগীরণ ঘটতে পারে, যদি আসামের বাংলা ভাষাভাষী মুসলমান ও হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর ভাষা ও ধর্মের ভিত্তিতে ন্যায়বিচার করা না হয়।

লোকগুলোকে এমন সুযোগও দেয়া হচ্ছে না, যাতে এরা ফরেনারস ট্রাইব্যুনালে প্রমাণ করতে পারে, এরা ভারতেরই নাগরিক। এমনকি তাদের কাছে যথাযথভাবে নোটিশও পৌঁছানো হয়নি। নোটিশ পাঠানো হয়েছে তাদের অস্থায়ী ঠিকানায় কিংবা এমন স্থানে তা পাঠানো হয়েছে, যা ব্রহ্মপুত্রের নদীভাঙনে ভেসে গেছে। এসব ঠিকানাই শুধু সরকারিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তা ছাড়া, উ-ঠড়ঃবৎ তথা ‘ডাউটফুল’ ভোটারের ধারণা সম্পূর্ণ অবৈধ। সংবিধানে এর কোনো স্থান নেই।

কেউ হতে পারেন নাগরিক কিংবা অনাগরিক, ‘ডাউটফুল সিটিজেন’ হতে পারেন না। বেশিরভাগক্ষেত্রে, মানুষকে বিদেশী ঘোষণা করা হচ্ছে একটি পক্ষের স্বার্থে। এর ফলে ওদেরকে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক থেকে ক্রমেই দুর্বল হয়ে মরতে হবে।

আমরা আরো লক্ষ করেছি, যেসব লোককে ‘বিদেশী’ ঘোষণা করা হয়েছে, তাদের রায়ের কপিও দেয়া হচ্ছে না। এই কপি না পাওয়ায় তারা উচ্চতর আদালতে এ ব্যাপারে চ্যালেঞ্জও করতে পারছেন না।’

আসামের ডিটেনশন ক্যাম্পের পরিস্থিতি

আসামের কারাগারগুলোয় তৈরি করা এসব ডিটেনশন ক্যাম্পের পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ তা উঠে এসেছে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকমী হর্ষ মন্দারের এক কলামে। বিবিসি হিন্দি সার্ভিসে তিনি লেখেন- ‘যাদের বিদেশী বলে চিহ্নিত করা হবে, তাদের অবস্থাটা কী হতে পারে, তার একটা আন্দাজ আমরা পেতে পারি সেই সব মানুষের পরিস্থিতির দিকে তাকালেই, যাদের আসামের বিদেশী ট্রাইব্যুনাল ইতিমধ্যেই বিদেশী বলে চিহ্নিত করেছে। বিদেশী বলে চিহ্নিত এইসব মানুষদের রাজ্যের বিভিন্ন জেলের মধ্যেই গড়ে তোলা বন্দীশিবিরে রাখা হয়েছে।

বেশ কিছু মানুষ তো এমনও রয়েছেন, যারা গত এক দশক ধরে এভাবে বন্দীশিবিরে রয়েছেন। ছাড়া পাওয়ার কোনো আশা সম্ভবত তারা আর দেখেন না। এইসব বন্দীশিবিরগুলোতে মানবাধিকার সংগঠন বা মানবাধিকার কর্মীদের যাওয়া নিষেধ। তাই এইসব শিবিরের মানুষদের অবস্থা কখনই সাধারণ মানুষের সামনে আসেনি। গতবছর জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যখন আমাকে সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ পর্যবেক্ষকের পদে নিয়োগ করতে চায়, আমি সেটা গ্রহণ করেছিলাম।

এ বছরের ২২ থেকে ২৪ জানুয়ারি আমি আসামে গিয়েছিলাম। গোয়ালপাড়া আর কোকড়াঝায়ের জেলের মধ্যেই যে বন্দীশিবির রয়েছে, সেগুলো ঘুরে দেখি। ওখানে বন্দীদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলি। মানবিক আর আইনগত দুই দিক থেকেই এই বন্দীশিবিরগুলোর এক ভয়াবহ চিত্র দেখতে পেয়েছিলাম আমি।’

বন্দীশিবিরগুলোতে আইনি সহায়তা

‘এই বন্দীশিবিরগুলোতে যেসব অবৈধ বিদেশী বলে চিহ্নিত মানুষরা আটক রয়েছেন, তাদের বেশিরভাগকেই নূন্যতম আইনি সহায়তা দেয়া হয় না। বিদেশী ট্রাইব্যুনালে এসব মানুষ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পান নি। বেশিরভাগ মানুষকেই নজরবন্দী করে রাখা হযয়েছে এই কারণে যে, তারা ট্রাইব্যুনাল বারবার নোটিশ পাঠিয়ে হাজিরা দিতে বললেও তারা ট্রাইব্যুনালে হাজির হন নি। তবে আমাকে বন্দীশিবিরের বেশিরভাগ মানুষই জানিয়েছেন, তেমন কোনো নোটিশই তারা পান নি। এ

কটা মানবিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়ার কারণে আমরা ধর্ষণ বা খুনের মতো কঠিন অপরাধে অভিযুক্তদেরও আইনি সহায়তা দিয়ে থাকি। কিন্তু অবৈধ বিদেশী নাগরিক চিহ্নিতকরণের মামলায় অপরাধ না করা সত্ত্বেও বহু মানুষ বন্দীশিবিরে কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন মামলা লড়ার জন্য সাহায্য পাচ্ছেন না বলে! সাধারণ জেলের মধ্যেই একটা অংশে এসব বন্দীশিবির তৈরি হয়েছে। অনেক কয়েদীকে তো বছরের পর বছর বন্দী থাকতে হচ্ছে। এদের না দেয়া হয় কোনও কাজ-কর্ম, না বিনোদনের সামান্যতম সুযোগ। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করারও কোনো সুযোগ নেই এদের। ওদের তো বন্দীশিবির থেকে ছাড়া পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আমার চোখে পড়ছে না।

অন্যান্য জেলের কয়েদীদের অন্তত হাঁটাহাঁটি করার বা খোলা আকাশের নিচে সময় কাটানোর সুযোগ থাকে। ওদের সেই সুযোগও নেই। দিনের বেলাতেও তাদের ব্যারাকের মধ্যেই কাটাতে হয়।

কারণ অন্য কয়েদী, অর্থাৎ ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে মেলামেশা করার অধিকার তাদেও নেই। পুরুষ, নারী আর ছয় বছরের বেশি বয়সী শিশুদের পরিবারের থেকে আলাদা করে রাখা হয়। অনেকেই আছেন, যারা নিজের জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে অনেক বছর দেখা করতে পারেন নি। আত্মীয়-স্বজনের অসুখবিসুখ বা মৃত্যু হলেও প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার অনুমতি পান না এরা।

যুক্তিটা হলো, প্যারোলে কিছুদিনের জন্য মুক্তি পাওয়ার অধিকার একমাত্র সাজাপ্রাপ্ত ভারতীয় বন্দীদেরই রয়েছে। এরা তো সাজাপ্রাপ্ত এমনকি ভারতীয়ই নন! বারে বারে মনে করিয়ে দওয়া সত্ত্বেও মানবাধিকার কমিশন, কেন্দ্র অথবা রাজ্য সরকারগুলো আমাকে এই তথ্যটাও জানায় নি- বন্দীশিবিরগুলো নিয়ে আমি যে রিপোর্ট দিয়েছিলাম তার পরিণতি কী হলো! আর এর পরে (এ বছরের ডিসেম্বর) এনআরসির প্রক্রিয়া শেষ হলে যখন লাখো মানুষকে বিদেশী বলে চিহ্নিত করা হবে, তখন পরিস্থিতিটা কী দাঁড়াবে, ভাবতেই গা শিউরে উঠছে।’…

দশকের পর দশক ধরে আসামের পরিস্থিতি

nrc in assam- আসাম-এনআরসি-ও-বিজেপি

আসামের পরিস্থিতি আগে থেকেই জটিল ছিলো। দশকের পর দশক ধরে সেখানে অভিবাসী সংক্রান্ত অপরাজনীতি চলে আসছে। সত্তুর দশকের শেষ থেকে আশির মধ্যভাগ পর্যন্ত তো রক্তক্ষয়ী লড়াই চলেছে। তবে সেগুলোর মোটিভ যথেষ্ট ফেয়ার ছিলো। বিবাদ ছিলো ভিনদেশীদের নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ থেকে গিয়ে না ফেরা শরণার্থী বা নেপাল-আফগান-পাকিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক; আসামীরা সমানভাবে লড়াই করেছে তাদের সবার নাগরিকত্ব প্রদানের বিরুদ্ধে। তবে নব্বইয়ের পর থেকে এটা সাম্প্রদায়িকতায় মোড় নেয়।

মুসলিমদের প্রাধান্য থাকায় আরো কয়েকটি প্রদেশের মতো কেন্দ্রীয় সরকারগুলো আসামের মুসলমানদেরও ভোটব্যাংক হিসেবে ট্রিট করতে থাকে। এই ফাঁকে আশ্রয় নেয়া অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা মূলধারায় মিশে যাবার সুযোগ পেয়ে যান। সমস্যা তখনো তেমন মাথাচাড়া দেয়নি।

২০১১ সালের আদমশুমারিতে মুসলমানদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হিন্দুদের চেয়ে বেশি হিসেবে উঠে আসার পরই শুরু হয় তোলপাড়। কানে কানে চলা গুজব প্রকাশ্যে চলে আসে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর তো রীতিমতো ঝড় বইতে শুরু করে।

কোনো কারণ বা যুক্তি না থাকলেও জুড়ে দেয়া হয় ‘বাংলাদেশী মুসলমানদের’ আসামে হিজরতের আজব টার্ম। কয়েক লাখের সংখ্যাটা লাফাতে লাফাতে ৭০-৮০ লাখ হয়ে কোটির ঘরে পৌঁছে যায়। বাংলাদেশী মুসলমানরা এসে হিন্দুদের জায়গা জমি কিনে নিচ্ছে, চাকরিবাকরিতে ভাগ বসাচ্ছে- এই অপপ্রচার স্থানীয় হিন্দুদের প্রত্যাশিতভাবেই নাড়া দেয়।

এরপর যথারীতি ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে টার্গেট করে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদি ও অমিতশাহ নতুন স্ট্র্যাটেজি সেট করেন। আসামের মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয় ছড়িয়ে দেয়া হয় দেশছাড়া করার। অন্যদিকে হিন্দুদের আশ্বস্ত করা হয় নাগরিকত্ব প্রদানের অঙ্গীকারে। তাদের হুমকি যে শুধু মুখের নয় দ্রুতই তা সামনে আসে। সরাসরি সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে ২০১৫ সালেই নাগরিক নিবন্ধর প্রক্রিয়া বা এনআরসি শুরু হয়ে যায়। মাস কয়েক পরই হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিতে বিজেপি সংসদে বিশেষ সংশোধনী বিলও নিয়ে আসে।

বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী

এদিকে বিজেপি সভাপতি অমিতশাহ প্রকাশ্যে বারবার ‘বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী’ টার্ম উল্লেখ করে মুসলমানদের তাড়াবার হুমকি দিতে থাকেন। মোদি নিজেও বেশ কয়েকবার বাংলাদেশীদের তাড়াবার কথা বলেছেন। এই বিপুল ভয় ছড়িয়ে নির্বাচনের ঠিক আগে আগে মোদি ও অমিতশাহ দুজনের পক্ষ থেকেই মুসলমানদেরও আশ্বাস দেয়া হয় ‘সুযোগ দেয়া হবে’র কথা বলে। মানে কোনো উপায় তো নেই-ই, চান্স একটাই- ভোটটা কাকে দাও তা দেখেই আমরা মূল সিদ্ধান্ত নেবো! বিশেষজ্ঞদের সব অনুমান পাল্টে দিয়ে তাই সর্বোচ্চ ৬০ আসনে জিতে প্রথমবারের মতো বিজেপি আসামে কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়।

নির্বাচনে কংগ্রেসের অন্তত ১৫টি ঘাঁটি বা সরাসরি মুসলিম ভোটারদের প্রাধান্য থাকা ৩০টি আসনের কোনো প্রভাবই দৃশ্যমান হতে পারে নি। অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফন্টের মাওলানা বদরুদ্দিন আজমল যেখানে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আলোচনায় উঠে আসছিলেন, নির্বাচনের পর দেখা যায় তার দল কোনোরকমে মাত্র ১০টি আসনে জিততে সক্ষম হয়েছে! নির্বাচনে জয়লাভ আর এনআরসির প্রক্রিয়া বিজেপির সামনে সুযোগের নতুন দরজা খুলে দেয়। দ্রুত এনআরসি সম্পন্ন করতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বিজেপির জন্য আশীর্বাদ হয়ে হাজির হয়। ২০১৯ সালের কেন্দ্রীয় লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন হিসেব শুরু করেন মোদি-অমিত শাহ জুটি। এনআরসির নামে আসামে এখন সে অপরাজনীতিরই চূড়ান্ত মহড়া চলছে। 

ট্রাইব্যুনাল ও গ্রেফতারি পরোয়ানা

মুহাম্মদ খাইরুল ইসলাম। আসামের মরিগাঁওতে থোঙ্গাসালি খন্ডপুকুরি নিম্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সরকারি এই বিদ্যালয়ে সমস্ত কাগজপত্র পরীক্ষা করেই তাকে নিযুক্তিপত্র দেওয়া হয়। জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) প্রথম তালিকা তৈরির কাজেও তিনি নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু মরিগাঁও জেলা বিদেশি ট্রাইব্যুনাল হঠাতই তাকে তথাকথিত ‘বিদেশি’ বলে ঘোষণা করে। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে সরিয়ে নেওয়া হয় এনআরসি প্রক্রিয়া থেকে। জারি হয় বিদেশীদের জন্য অবধারিত গ্রেফতারি পরোয়ানা।

ডিটেনশন ক্যাম্পের ভয়াবহ ও অসহায় বন্দীত্ব এড়াতে গা ঢাকা দিতে বাধ্য হন খইরুল। পারেন নি। ধরা পড়েন পুলিশের হাতে।

মরিগাঁওয়ের পুলিশ সুপার স্বপ্ননীল ডেকা পরে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খাইরুলকে তেজপুরে কারাগারের বিদেশী বন্দিশালায় পাঠানো হয়েছে। এখন তাঁর মা, দুই ভাই ও বোনকেও খোঁজা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, খাইরুল যদি বিদেশীই হন, তাহলে তিনি সরকারি স্কুলে চাকরি পেলেন কী করে? সবকিছু যাচাই করেই তো চাকরি দেওয়া হয়। খায়রুলকেও তাই দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু মুসলিম আর বাংলাভাষী হওয়ার ‘অপরাধেই’ শেষমেষ এমন পরিণতি বরণ করতে হলো। সরকারি চাকরিরত ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত খাইরুলদেরই যদি এক ঝটকায় এমন হালত হয়, গ্রামের অশিক্ষিত-হতদরিদ্র মুসলমানদের সামনে কী বিপর্যয় অপেক্ষা করছে তা সহজেই অনুমেয়।

কতোজন ইতোমধ্যে এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন সে খবর-ইবা কে রেখেছে। আসামের মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা সাধন পুরকায়স্থ বলেন- ‘এটা স্বদেশীকে বিদেশী বানানোর আইনি প্রক্রিয়ার ফল। আরও বহু বাঙালিই সেই আইনি প্রক্রিয়াতেই বিদেশী হচ্ছেন। আমদেরও হয়তো একদিন পোরা হবে জেলে।’

আসামের এনআরসির সাম্প্রতিক চূড়ান্ত খসড়ায় ৪০ লাখ লোক বাদ পড়েছেন। তাদের বড় একটা অংশ মুসলমান। অনেক হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মের লোকেরা থাকলেও তাদের জন্য অপেক্ষা করছে পৃথক নাকরিকত্ব আইন।

পাকিস্তান-আফগানিস্তান-বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মের লোকদের বিশেষ বিবেচনায় নাগরিকত্ব দেবার ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। সুতরাং বিপদ যদি হয় হবে কেবল মুসলমানদের।

সমস্যা হলো- মুসলমান মুসলমান বলে আওয়াজ তোলা হলেও প্রকৃতপক্ষে আসামে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মুসলমানের সংখ্যা খুব বেশি নয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা গিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই ফিরে এসেছেন। রয়ে যাওয়া মানুষদের বড় অংশই যে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক তাতে কারো সন্দেহ নেই। আর স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ থেকে মুসলিমদের আসামে যাওয়ার কোনো কারণই ঘটেনি। কাজ বা অন্য কারণে কেউ কেউ গিয়ে থাকলেও সেটা মোটেও বিচলিত হওয়ার মতো কোনো সংখ্যা নয়।

আসামে বাংলাদেশী মুসলমান

আসামের স্থানীয় কোর্টের বিচারপতি আমান ওয়াদুদ আল জাজিরায় এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন- ’আসামে বাংলাদেশী মুসলমান নেই। নদীভাঙনসহ নানা কারণে এক জেলার মুসলমান হয়তো আরেক জেলায় গিয়ে বসতি করেছেন। কিছু হয়তো পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছেন। এর বাইরে তেমন কিছু নেই।’

কৃষিনির্ভর মুসলিমদের বড় অংশেরই বাস ব্রহ্মপুত্রের তীরে। বন্যায় ও নদীভাঙনে প্রতিবছরই তাদের অনেকের এলাকা ছাড়া হতে হয়। আর যেহেতু তারা জন্মনিয়ন্ত্রণে আগ্রহী নন, তাদের গ্রোথও বেশি হয়েছে। আর একটা ব্যাপার গত কয়েক দশকে ঘটেছে। প্রচুর আসামী মানুষ স্থানীয় ভাষার বদলে বাংলাকে নিজেদের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। সুতরাং ২০১১ সালের আদমশুমারিতে মুসলিম জনসংখ্যা ও বাংলাভাষী মানুষের হার আগের তুলনায় বেশি উঠে আসার প্রেক্ষিতেই বিতর্কটা শুরু হয়। বিজেপী যাতে রং ছড়িয়ে শুধু নিজেদের কার্যসিদ্ধি করতে চেয়েছে।

প্রকৃত আসামবাসীদের প্রতিবাদও মুসলিমদের ঘিরে নয়, কখনো ছিলো না। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সব ভিনদেশীদেরই নাগরিকত্ব দেয়ার বিপক্ষে তারা। কিন্তু বিজেপি সরকার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় এক ঢিলে বেশ কয়েকটা পাখি মারতে চাচ্ছে।

মূল লক্ষ্য- প্রান্তিক এসব মুসলিমদের নাগরিকত্বের বাইরে রেখে রাজ্যের মুসলিম প্রাধান্য কমিয়ে আনা। অন্যদিকে আশ্রয় নেয়া হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিয়ে রিজার্ভ ভোটে সমন্বয় সৃষ্টি। ফলে ২০১৯ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের লড়াইয়ে আসামজুড়ে বিজেপির ভালো একটা অবস্থান তৈরি হবে। পাশাপাশি মুসলিম তাড়িয়ে হিন্দুদের নাগরিক বানানোয় ভারতজুড়ে তাদের হিন্দুয়ানি ইমেজ আরো বৃদ্ধি পাবে।

টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসতে মোদি-অমিতশাহর বিজেপির জন্য এরচে ভালো খবর আর কী হতে পারে। তাই বারবার বিশেষভাবে ‘বাংলাদেশী মুসলমান’ টার্মটাই ব্যবহার করছেন মোদি-অমিত শাহসহ বিজেপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। এখন তো তা পুরো ভারতজুড়েই ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এতে রাজ্যের প্রকৃত আসামবাসীর যে কোনো ফায়দা হবে না, বিজেপির তাতে পরোয়া নেই। আর বিনা দোষে অসংখ্য মুসলিমরা বিপর্যয়ে পড়বেন- সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করার কী দায় পড়েছে তাদের। মুসলমানদের আবার মানবাধিকার কিসের!

বিজেপির রাজনৈতিক বিবেচনা

একদিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশের তালিকা থেকে বাদ পড়া ও নতুন করে তালিকাভুক্ত হবার আইনী লড়াই, অন্যান্য স্থানীয় মুসলিমদের নিজেদের জীবিকা ও আত্মীয়দের রক্ষার সংগ্রাম; অন্যদিকে বিজেপী নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় হিন্দুদের লাগাতার হুমকি-ধামকি সবমিলিয়ে আসামের মুসলমানদের পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে বিভীষিকাময়। ইতোমধ্যে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কয়েকজন তো ভয় ও আতংকে আত্মহত্যা করেছেন বলেও খবর বেরিয়েছে। এখনো যা চলছে সেগুলোকে একপ্রকার ডেমো হিসেবেই আখ্যায়িত করা যায়। আসছে ডিসেম্বরে সামনে আসবে প্রকৃত চিত্র। পরিস্থিতি তখন কী দাঁড়ায় আল্লাহ মালুম।

আসছে নির্বাচনে জিতে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে বিজেপি মরিয়া। ব্যাপার যে মোটেও সহজ হবে না মোদি সেটা ভালোই জানেন। সাম্প্রতিক বেশ কিছু রাজ্য পর্যায়ের নির্বাচনে মোদিম্যাজিক অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। অর্থনীতিসহ আরো কিছু সমীকরণ মোদির পক্ষে কথা বলছে না। হিন্দুইজম বিস্তার ও সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর প্রকাশ্য অভিযোগ তো আছেই। উত্তর ও মধ্যপ্রদেশগুলোতে প্রত্যাশিত পরিমাণ আসন না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে মোদি-অমিত শাহ টার্গেট করেছেন আসাম-পশ্চিমবঙ্গসহ দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের প্রদেশগুলোকে। আসামে তড়িঘড়ি করে এনআরসি বাস্তবায়ন করার এটাই প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকেরা।

এই বিতর্কে সৃষ্ট উত্তেজনা দেশ ও স্থিতিশীল সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর হলেও ভোটের প্রশ্নে বিজেপির জন্য লাভজনকই হবে।

টানা ২য় বার ক্ষমতায় বসার স্বপ্নে বিভোর মোদি-অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন বিজেপির তাই দেশবাসীর ক্ষতি বা মুসলমানদের সর্বনাশ নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। শংকা নিয়ে আমাদেরও অপেক্ষায় থাকতে হবে- পৃথিবীর বৃহত্তর মানবকারাগারে পরিণত হবার ঝুঁকিতে থাকা আসামের ভাগ্যে সামনে ঠিক কী অপেক্ষা করছে।


[মাসিক নেয়ামত, অক্টোবর ২০১৮]

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *