ঈদুল আজহা ও কোরবানি: আপনি যা জানতে চেয়েছেন

কুরবানী ঈদের নামাজ

Date

Author

Blog Duration

16 minutes

কোরবানি নামাজের মতো স্বাতন্ত্র ইবাদত। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে কোরবানির গুরুত্ব, ফজিলত ও সাওয়াব অনেক। আর কোরবানি হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সুন্নাত। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে তা পালন করেছেন। সে কারণে তা উম্মতে মুহাম্মাদির সামর্থ্যবানদের জন্যও আদায় করা আবশ্যক।

কুরবানী আল্লাহ তা‘আলার একটি বিধান। আদম আ. হতে প্রত্যেক নবীর যুগে কুরবানী করার ব্যবস্থা ছিল। যেহেতু প্রত্যেক নবীর যুগে এর বিধান ছিল সেহেতু এর গুরুত্ব অত্যধিক। যেমন ইরশাদ হয়েছে:

আমি প্রত্যেক স¤প্রদায়ের জন্য কুরবানীর নিয়ম করে দিয়েছি; তিনি তাদেরকে জীবনোপকরণ স্বরূপ যে সকল চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছেন, সেগুলোর উপর যেন তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করে। (সূরা আল-হাজ্জ: ৩৪) ‘আর তুমি তাদের নিকট আদমের দুই পুত্রের সংবাদ যথাযথভাবে বর্ণনা কর, যখন তারা উভয়ে কুরবানী পেশ করল। অতঃপর একজন থেকে গ্রহণ করা হলো আর অপরজনের থেকে গ্রহণ করা হলো না। (সূরা আল-মায়িদাহ:৩৪)

আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বন্ধু ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে বিভিন্ন পরীক্ষায় অবতীর্ণ করেছেন এবং ইবরাহিম আ. সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহিমকে তার রবের কয়েকটি বাণী দিয়ে পরীক্ষা করলেন, অতঃপর সে তা পূর্ণ করল। তিনি বললেন, আমি তোমাকে নেতা বানাবো’। (সূরা আল-বাকারাহ-১২৪) নিজ পুত্র যবেহ করার মত কঠিন পরীক্ষার সম্মুখিন হয়েছিলেন ইবরাহিম আ.। কুরবানী হযরত ইব্রাহিম আ. এর সুন্নাহ।

কোরবানি

কুরবানী- makkah

উর্দূ ও ফার্সিতে কোরবানি শব্দটির ব্যবহার হলেও এটি করব বা কোরবান (قرب বা قربان) আরবি শব্দ থেকে উৎপত্তি হয়েছে। যার অর্থ- ‘নৈকট্য বা সান্নিধ্য’। কোরবান হলো, প্রত্যেক সেই বস্তু, যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। আর সেখান থেকেই ফার্সি বা উর্দু-বাংলাতে ‘কোরবানি’ শব্দটি গৃহীত হয়েছে।

আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ার আশায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত কোরবানির নিয়তে উট, গরু-মহিষ ও ছাগল-ভেড়া জবাই করাই হলো কোরবানি। আর এ পশুর পশম যতবেশিই হোক না কেন, প্রতিট পশমের বিনিময়ে রয়েছে একটি করে সওয়াব। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত যায়েদ ইবনে আরকাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, সাহাবায়ে কেরাম একদিন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই কোরবানি কী?

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘এটা তোমাদের পিতা হজরত ইবরাহিম (আলাইহিস সালাম)-এর সুন্নাত (রীতিনীতি)। তাঁকে আবারো জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এতে আমাদের কি ফজিলত (পূণ্য রয়েছে)?

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন, ‘(কোরবানির জন্তুর) প্রতিটি লোমের (পশমের) পরিবর্তে (একটি করে) নেকি রয়েছে।’ তাঁরা আবারো জিজ্ঞাসা করলেন, ’পশম বিশিষ্ট পশুর বেলায় কী হবে? (পশুর তো পশম অনেক বেশি)। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘পশমওয়ালা পশুর প্রতিটি পশমের পরিবর্তেও একটি করে নেকি রয়েছে।’ সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

কোরবানি ঈদ ২০২২ কবে

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামী ১০ জুলাই, রোববার দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

৩০ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

চাঁদ দেখা কমিটির সভার সভাপতি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল আওয়াল হাওলাদার বলেন, সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, তাই শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে পবিত্র জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১০ জুলাই সারা দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

বুধবার মধ্যপ্রাচ্যে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামী ৯ জুলাই সৌদি আরব, কাতার, আরব আমিরাত, বাহরাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

কোরবানির ইতিহাস

কোরবানির ইতিহাস অতি প্রাচীন। কোরআনে হাবিল-কাবিলের ঘটনাই তার প্রমাণ। ইসলামে প্রথম কোরবানি এটি। হাবিল প্রথম মানুষ, যিনি আল্লাহর জন্য একটি পশু কোরবানি করেন। ধর্মীয় বিবরণ থেকে জানা যায়, হাবিল একটি ভেড়া এবং তার ভাই কাবিল তার ফসলের কিছু অংশ স্রষ্টার উদ্দেশ্যে নিবেদন করেন।

সে সময় আল্লাহর নির্ধারিত শরিয়ত বা পদ্ধতি ছিল এই যে, আকাশ থেকে আগুন নেমে আসবে এবং যার কোরবানি কবুল হবে তার জিনিসকে আগুন গ্রহণ করবে। অর্থাৎ অগুন সে জিনিসকে জালিয়ে ভষ্ম করে দেবে। সেই অনুযায়ী, আকাশ থেকে নেমে আসা নেককার হাবিলের জবেহকৃত পশুটির কোরবানি গ্রহণ করে। অন্যদিকে কাবিলের ফসলস্বরূপ প্রদত্ত কোরবানি প্রত্যাখ্যাত হয়।

পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা ইসলামের নবি ও রাসুল, মুসলিম জাতির পিতা, হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সাল্লামকে স্বপ্নযোগে এ মর্মে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি করার নির্দেশ দেন, ‘তুমি তোমার প্রিয় বস্তু আল্লাহর নামে কোরবানি করো। হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম আদিষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর জন্য ১০টি উট কোরবানি করেন। কিন্তু পুনরায় তিনি কোরবানি করার জন্য আদেশ প্রাপ্ত হন। তখন তিনি আবারও ১০০টি উট কোরবানি করেন।

তারপরেও তিনি একই আদেশ পেয়ে ভাবলেন, আমার কাছে তো এ মুহূর্তে সবচেয়ে প্রিয়বস্তু হলো- পুত্র ইসমাইল আলাইহিস সালাম। এছাড়া আর কোনো প্রিয় বস্তু নেই। তখন তিনি হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে কোরবানি করতে মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। যখন হজরত ইবরাহিম তার পুত্রকে কোরবানি দেওয়ার জন্য গলায় ছুরি চালানোর চেষ্টা করেন, তখন তিনি বিস্মিত হয়ে দেখেন যে ইসমাইল আলাইহিস সালামের পরিবর্তে একটি প্রাণী কোরবানি হয়েছে এবং তার কোনো ক্ষতি হয়নি।

ঐতিহাসিক এই ধর্মীয় ঘটনাকে স্মরণ করে সারাবিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর ঈদুল আজহা উৎসব পালন করে। ইসলামে হিজরি ক্যালেন্ডারের ১২তম চন্দ্রমাস জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানি করার সময় হিসাবে নির্ধারিত। এ দিনে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি দেন।

কোরবানি সম্পর্কে কুরআনের আয়াত

আল্লাহ তাআলা কুরআনে কোরবানি সম্পর্কে বলেছেন-

১. فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ

‘অতএব তুমি তোমার প্রতিপালকের জন্য নামাজ পড় এবং কোরবানি কর।(সুরা কাউসার : আয়াত ২)

২. قُلْ إِنَّ صَلاَتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِيْ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ

‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন, অবশ্যই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মৃত্যু বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই।’ (সুরা আনআম : আয়াত ১৬২)

কোরবানি সম্পর্কে হাদিস

কোরবানির বিষয়-আশয় ও নানা প্রসঙ্গ নিয়ে প্রচুর হাদিস বর্ণিত হয়েছে। পাঁচটি নির্বাচিত হাদিস উল্লেখ করা হলো-

এক. নবী করিম সা.-এর কোরবানি

আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) দুইটি সাদা-কালো বর্ণের (বড় শিং বিশিষ্ট) নর দুম্বা কোরবানি করেছেন। আমি দেখেছি, তিনি দুম্বা দুটির গর্দানে পা রেখে— বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবার বললেন। অতঃপর নিজ হাতে জবেহ করলেন। (বুখারি, হাদিস : ২/৮৩৪)

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘নবী করিম (সা.) ঈদগাহে জবেহ করতেন এবং নহর করতেন।’ (বুখারি, হাদিস : ২/৮৩৩)

অতএব কোরবানির পশু জবাই করার নিয়ম হলো- গরু, ছাগল ও দুম্বা জবাই করা হবে এবং উট নহর করা হবে। নবী করিম (সা.) এমনটাই করেছেন।

দুই. কোরবানির পশু জবাইপ্রসঙ্গ

শাদ্দাদ ইবনে আওছ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা সবকিছুর ওপর অনুগ্রহ অপরিহার্য করেছেন। অতএব, যখন তোমরা জবাই করবে— তো উত্তম পদ্ধতিতে জবাই করো। প্রত্যেকে তার ছুরিতে শান দেবে এবং তার পশুকে শান্তি দেবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/১৫২)

তিন. কোরবানির পশুর বয়স

জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা (কোরবানিতে) ‘মুছিন্না’ ছাড়া জবেহ করবে না। তবে সংকটের অবস্থায় ছয় মাস বয়সী ভেড়া-দুম্বা জবেহ করতে পারবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/১৫৫)

কোরবানির পশুগুলোর ক্ষেত্রে উটের বয়স অন্তত পাঁচ বছর হতে হবে। আর গরু ও মহিষের হতে হবে দুই বছর। ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার হতে হবে এক বছর। প্রসঙ্গত, ভেড়া ও দুম্বার ক্ষেত্রে উপরোক্ত হাদিস থেকে জানা গেল যে, তা ছয় মাসের হলেও চলবে। তবে তা বিশেষ কারণে কিংবা ভেড়া ও দুম্বা দেখতে এক বছর বয়সীর মতো দেখালে।

চার. কোরবানি করার সময়

বারা ইবনে আজিব (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের উদ্দেশে খুতবা দিলেন। তাতে বললেন, ‘আমাদের এই দিবসে প্রথম কাজ নামাজ আদায় করা, এরপর কোরবানি করা। সুতরাং যে এভাবে করবে— তার কাজ আমাদের তরিকা (পদ্ধতি) মতো হবে। আর যে আগেই জবেহ করেছে (তার কাজ তরিকা মতো হয়নি) অতএব তা পরিবারের জন্য প্রস্তুতকৃত গোশত, (আল্লাহর জন্য উৎসর্গিত) কোরবানি নয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২/৮৩২)

অন্য হাদিসে আছে কোনো কোনো সাহাবি ভুলক্রমে ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করেছিলেন। নবী করিম (সা.) তাদের পুনরায় কোরবানি করার আদেশ করেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২/৮২৭)

পাঁচ. কোরবানির গোশত খাওয়া-সংরক্ষণ

জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী করিম (সা.) তিনরাত পর কোরবানির গোশত খেতে নিষেধ করেছিলেন। এরপর (অবকাশ দিয়ে) বলেন, ‘খাও, পাথেয় হিসাবে সঙ্গে নাও এবং সংরক্ষণ করে রাখ।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/১৫৮)

উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.)-এর এক বর্ণনায় আছে যে, ‘খাও, সংরক্ষণ কর এবং সদকা করো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/১৫৮)

কুরবানীর মাসায়েল

আদি সভ্যতা

কোরবানি কার উপর ওয়াজিব

ঈদুল আজহার দিন প্রয়োজনীয় খরচ ছাড়া সাড়ে সাত তোলা সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা কিংবা সমপরিমাণ সম্পদ যার কাছে থাকবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য নেসাব পরিমাণ মাল পূর্ণ এক বছর থাকা জরুরি নয়, কোরবানির শেষ দিন সূর্যাস্তের আগেও যদি কেউ নেসাব পরিমাণের মালিক হয় তাহলে তার ওপরও কোরবানি ওয়াজিব। জীবিকা নির্বাহের জন্য যে পরিমাণ জমি ও ফসলের দরকার তা থেকে অতিরিক্ত জমি ও ফসলের মূল্য অথবা যেকোনো একটির মূল্য নেসাব পরিমাণ হলেও কোরবানি করা ওয়াজিব। একই পরিবারের সব সদস্য পৃথক পৃথকভাবে নেসাবের মালিক হলে সবার ওপর আলাদাভাবে কোরবানি ওয়াজিব। কোনো উদ্দেশ্যে কোরবানির মান্নত করলে সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হলেও কোরবানি করা ওয়াজিব। অতএব প্রত্যেক স্বাধীন, ধনী, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্ক নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব।

কুরবানী করার দোয়া

কুরবানির পশু জবেহ করার জন্য শোয়ানোর পর দোয়া পড়া। এ দোয়াটি বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। যদিও অনেকে দোয়াটির সনদের ব্যাপারে মতপার্থক্য করেছেন। তবে এ দোয়াগুলো পড়ে কুরবানি করা উত্তম। তবে কেউ শুধু বিসমিল্লাহ বলে নালীগুলো কেটে দিলেই কুরবানি শুদ্ধ হয়ে যাবে।

দোয়াটি হলো-

اَللَّهُمَّ إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ عَلَى مِلَّةِ اِبْرَاهِيْمَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ – إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ – لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ – بِسْمِ اللهِ اَللهُ اِكِبَر – اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَ لَكَ

উচ্চারণ- ইন্নি ওয়াঝঝাহতু ওয়াঝহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা আলা মিল্লাতি ইবরাহিমা হানিফাও ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বি-জালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা মিনকা ও লাকা।

  • যদি কেউ এ দোয়াটি না পারেন তবে ছোট্ট এ অংশটুকু পড়বেন-

بِسْمِ اللهِ اَللهُ اِكِبَر – اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَ لَكَ

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা।

কুরবানির পশু জবেহ করার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরি। তবে পশু জবেহ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য এ দুটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখলেই কুরবানির পশু জবেহ হয়ে যাবে। কুরবানি বিশুদ্ধ হয়ে যাবে। তাহলো-

  1. জবেহ করার সময় ‘بِسْمِ الله:বিসমিল্লাহ’ বলে জবেহ করা। অর্থাৎ বিসমিল্লাহ বলে জবেহ করার জন্য ছুরি চালানো শুরু করা। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে যেন পশু জবেহ করা না হয় সে বিষয়টি খেয়াল রাখা।
  2. জবেহ করার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, পশুর খাদ্যনালী, শ্বাসনালী আর দুই পাশে থাকা দুটি নালী কেটে দেয়া। এ নালীগুলে কাটা হয়ে গেলেই পশু জবেহ বিশুদ্ধ হয়ে যায়।

উল্লেখিত দুটি বিষয় খেয়াল রেখে যে কেউ তার নিজ নিজ পশু কুরবানি করতে পারেন।

কোরবানির পশু ও তার বয়স

ইসলামী শরিয়তে গরু-মহিষ, ভেড়া, ছাগল, দুম্বা, উট কোরবানি করাকে বৈধতা দান করেছে। তবে ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে আদায় করা চলবে কিন্তু গরু, মহিষ, উট সাত ব্যক্তি শরিক হতে পারবে। শর্ত একটাই শরিকদার সবার নিয়ত বিশুদ্ধ থাকতে হবে। এদের মধ্যে একজনেরও যদি লোক দেখানো বা গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্য হয় তাহলে কারো কোরবানি কবুল হবে না। ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, এক বছর বয়সী হওয়া আবশ্যক। তবে যদি ছয় মাসের দুম্বা এবং ভেড়া এরূপ মোটা তাজা হয় যে, দেখতে এক বছরের মতো মনে হয় তাহলে ওই ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা কোরবানি করা যাবে। আর ছাগল যত বড়ই হোক না কেন এক বছর পরিপূর্ণ হওয়া জরুরি, একদিন কম হলেও কোরবানি জায়েজ হবে না। গাভী, মহিষ দুই বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি। উট পাঁচ বছরের হওয়া জরুরি, একদিন কম হলেও কোরবানি হবে না। কোরবানির জন্য মোটা, তরতাজা, সুস্থ পশু হওয়া জরুরি। আতুর, লেংড়া, কানা, কানকাটা, লেজকাটা, দুর্বল পশু দিয়ে কোরবানি বিশুদ্ধ হবে না।

কোরবানির দিন

কোরবানির দিন হলো ১০, ১১ ও ১২ জিলহজ। এ তিন দিনের মধ্যে যেকোনো দিন কোরবানি করা জায়েজ আছে। তবে উত্তম দিন হচ্ছে প্রথম দিন অর্থাৎ ১০ জিলহজ। কোনো কারণ ছাড়া বিলম্ব না করা ভালো।

কোরবানির সময়

জিলহজের দশম দিন ঈদের নামাজ পড়ার পর থেকে জিলহজের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত কোরবানি করা যাবে। তবে ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করা যাবে না। ঈদের নামাজ পড়ে এসে কোরবানি করতে হবে। যদি শহরের একাধিক স্থানে ঈদের নামাজ হয় তাহলে যেকোনো এক স্থানে নামাজ আদায় হয়ে গেলে সব স্থানেই কোরবানি করা জায়েজ হবে।
জবাই : কোরবানিদাতা সে নিজেও জবাই করতে পারবে এবং কোনো আলেম তথা জানলেওয়ালা কাউকে দিয়ে কোরবানি করাতে পারবে। তবে উত্তম হচ্ছে নিজের কোরবানি নিজে করা। মুখ দিয়ে উচ্চারণ করে নিয়ত করা জরুরি নয় বরং অন্তরের নিয়তই যথেষ্ট। জবাই করার সময় অবশ্য অল্লাহর নাম নিতে হবে।

কোরবানির গোশত

কোরবানির গোশত নিজে খাবে এবং গরিব-মিসকিনদের খাওয়াবে। উত্তম পন্থা হচ্ছে গোশতকে তিন ভাগে ভাগ করা, একভাগ গরিব-মিসকিনকে দান করা। একভাগ আত্মীয়স্বজনকে দেয়া এবং এক অংশ নিজ পরিবারের জন্য রাখা।

কোরবানির পশুর চামড়া

কোরবানির পশুর চামড়া নিজে ব্যবহার করতে পারবেন এবং অন্যকে হাদিয়াও দিতে পারবেন। আবার মাদরাসার লিল্লাহ ফান্ডেও দান করা যাবে। বিক্রি করলে চামড়ার টাকা একমাত্র গরিব-মিসকিনকেই দান করতে হবে। সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে মাদরাসার গরিব ফান্ডে দান করা।

কোরবানি যেহেতু একটি উত্তম ইবাদত। এ ইবাদতটিও একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হওয়া চাই। কারণ আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, ‘নিশ্চই আমার কাছে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত কিছুই পৌঁছে না, তবে আমার কাছে পৌঁছে একমাত্র তাকওয়া।

কুরবানী সংক্রান্ত কিছু জরুরি মাসায়েল

কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি আদায় করা ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে, ‘যার কুরবানীর সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কুরবানী করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ -মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস ৩৫১৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫

কার উপর কুরবানী ওয়াজিব

মাসআলা : প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নেসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হল- এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। -আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫

কুরবানী করতে না পারলে

মাসআলা : কেউ যদি কুরবানীর দিনগুলোতে ওয়াজিব কুরবানী দিতে না পারে তাহলে কুরবানীর পশু ক্রয় না করে থাকলে তার উপর কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করেছিল, কিন্তু কোনো কারণে কুরবানী দেওয়া হয়নি তাহলে ঐ পশু জীবিত সদকা করে দিবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪; ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৫

কোন্ কোন্ পশু দ্বারা কুরবানী করা যাবে

মাসআলা : উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এসব গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্যান্য পশু যেমন হরিণ, বন্যগরু ইত্যাদি দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। -ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫

কুরবানীর পশুর বয়সসীমা

মাসআলা : উট কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানী করা জায়েয। অবশ্য এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬ মাস বয়সের হতে হবে।

উল্লেখ্য, ছাগলের বয়স ১ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে না। -ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫-২০৬

মাসআলা : উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কুরবানী করা জায়েয। অর্থাৎ কুরবানীর পশুতে এক সপ্তমাংশ বা এর অধিক যে কোন অংশে অংশীদার হওয়া জায়েয। এক্ষেত্রে ভগ্নাংশ- যেমন, দেড় ভাগ, আড়াই ভাগ, সাড়ে তিন ভাগ হলেও কোনো সমস্যা নেই। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭

কুরবানীর পশুতে আকীকার অংশ

মাসআলা : কুরবানীর গরু, মহিষ ও উটে আকীকার নিয়তে শরীক হতে পারবে। এতে কুরবানী ও আকীকা দুটোই সহীহ হবে। -হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২

মাসআলা : শরীকদের কারো পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয় তাহলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না।

মাসআলা : যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কুরবানী দেওয়ার নিয়তে কিনে আর সে ধনী হয় তাহলে ইচ্ছা করলে অন্যকে শরীক করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে একা কুরবানী করাই শ্রেয়। শরীক করলে সে টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম। -ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৫০-৩৫১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০

রুগ্ন ও দুর্বল পশুর কুরবানী

মাসআলা : এমন শুকনো দুর্বল পশু, যা জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। -জামে তিরমিযী ১/২৭৫; আলমগীরী ৫/২৯৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪

মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী

মাসআলা : মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী করা জায়েয। মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে। কুরবানীর স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে। -মুসনাদে আহমাদ ১/১০৭, হাদীস ৮৪৫; ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; কাযীখান ৩/৩৫২

অন্য কারো ওয়াজিব কুরবানী আদায় করতে চাইলে

মাসআলা : অন্যের ওয়াজিব কুরবানী দিতে চাইলে ওই ব্যক্তির অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি নিলে এর দ্বারা ওই ব্যক্তির কুরবানী আদায় হয়ে যাবে। নতুবা ওই ব্যক্তির কুরবানী আদায় হবে না। অবশ্য স্বামী বা পিতা যদি স্ত্রী বা সন্তানের বিনা অনুমতিতে তার পক্ষ থেকে কুরবানী করে তাহলে তাদের কুরবানী আদায় হয়ে যাবে। তবে অনুমতি নিয়ে আদায় করা ভালো।

কুরবানীর গোশত, চর্বি বিক্রি করা

মাসআলা : কুরবানীর গোশত, চর্বি ইত্যাদি বিক্রি করা জায়েয নয়। বিক্রি করলে পূর্ণ মূল্য সদকা করে দিতে হবে। -ইলাউস সুনান ১৭/২৫৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; কাযীখান ৩/৩৫৪; আলমগীরী ৫/৩০১

মাসআলা : কুরবানীদাতা এক স্থানে আর কুরবানীর পশু ভিন্ন স্থানে থাকলে কুরবানীদাতার ঈদের নামায পড়া বা না পড়া ধর্তব্য নয়; বরং পশু যে এলাকায় আছে ওই এলাকায় ঈদের জামাত হয়ে গেলে পশু জবাই করা যাবে। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৮

কুরবানীর পশুর হাড় বিক্রি

মাসআলা : কুরবানীর মৌসুমে অনেক মহাজন কুরবানীর হাড় ক্রয় করে থাকে। টোকাইরা বাড়ি বাড়ি থেকে হাড় সংগ্রহ করে তাদের কাছে বিক্রি করে। এদের ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। এতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু কোনো কুরবানীদাতার জন্য নিজ কুরবানীর কোনো কিছু এমনকি হাড়ও বিক্রি করা জায়েয হবে না। করলে মূল্য সদকা করে দিতে হবে। আর জেনেশুনে মহাজনদের জন্য এদের কাছ থেকে ক্রয় করাও বৈধ হবে না। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; কাযীখান ৩/৩৫৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১

কাজের লোককে কুরবানীর গোশত খাওয়ানো

মাসআলা : কুরবানীর পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া জায়েয নয়। গোশতও পারিশ্রমিক হিসেবে কাজের লোককে দেওয়া যাবে না। অবশ্য এ সময় ঘরের অন্যান্য সদস্যদের মতো কাজের লোকদেরকেও গোশত খাওয়ানো যাবে। -আহকামুল কুরআন জাস্সাস ৩/২৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩২৬; ইমদাদুল মুফতীন পৃ. ৮০২

জবাইকারীকে পারিশ্রমিক দেওয়া

মাসআলা : কুরবানীর পশু জবাই করে পারিশ্রমিক দেওয়া-নেওয়া জায়েয। তবে কুরবানীর পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যাবে না। -কিফায়াতুল মুফতী ৮/২৬৫

উপরের সকল তথ্য-উপাত্ত বিশ্বস্ত বিভিন্ন ইসলামী প্লাটফর্ম থেকে সংগৃহীত এবং যাচাইকৃত।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *